নওয়াব আলী হোমিও চিকিৎসালয় (ডাঃ নওয়াব আলী প্রফেসরের বাসা), ৩৬৬, বালুবাগান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
+৮৮০-১৭২০-৬৬৭১১৭
এ্যক্নে ভাল্গারিস / ব্রন (Acne Vulgaris)

এ্যক্নে ভাল্গারিস বা ব্রন সচরাচর দৃষ্ট একটি ত্বকের রোগ। কেবল ভারতীয় উপমহাদেশেই প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি মানুষ এ্যক্নে ভাল্গারিসে আক্রান্ত।

⮊. কারন (Causation)

⮲. শরীরবৃত্তীয় কারন (Physiological Causes)

আমাদের ত্বকের নিচে যে তৈলগ্রন্থি বা সিবাসিয়াস গ্ল্যান্ড’স (Sebaceous gland's) আছে, তা থেকে সিবাম (Sebum) নামক প্রাকৃতিক একধরনের তৈল উৎপাদন হয় যা আমাদের ত্বককে তৈলাক্ত রাখে এবং ত্বককে ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ন কাজ করে থাকে। এই সিবাম বা প্রকৃতিক তৈলের অতিরিক্ত উৎপাদন এবং বিশেষ কোন কারনে এই সিবাম নিঃসরণকারী লোমকূপ (Hair folilcle) এর পথে ত্বকের মৃতকোষ তথা Keratinocyte সঞ্চিত হয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তা থেকে এ্যক্নে ভাল্গারিস বা ব্রণের সৃষ্টি হয়।

   ⮚. গর্ভাবস্থা।

   ⮚. মেনোপজ।

⮲. রোগবৃত্তীয় কারণ (Pathological Causes)

   ⮚. বংশগত কারন।

   ⮚. হরমোন সংক্রান্ত কারন, বিশেষত: এন্ড্রোজেন হরমোনের আধিক্য।

   ⮚. পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (Polycystic ovarian syndrome বা PCOS)।

   ⮚. বিভিন্ন ঔষধ এবং স্টেরয়েড’স ব্যবহারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।

   ⮚. বিশেষ কিছু কসমেটিকস্ এর অপব্যবহার।

   ⮚. অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাদ্যাভাস।

⮲. পরিবেশগত কারণ (Environmental causes)

   ⮚. নোংরা, ধূলো-বালিপূর্ন স্থানে বরংবার গমনাগমন।

   ⮚. ত্বক অপরিচ্ছন্ন রাখা।

   ⮚. মানসিক চাপ ও অবসাদ।

কারা অধিক আক্রান্ত হন (More prone to) 

সাধারনতঃ ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন।

তবে ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সীরা অধিক আক্রান্ত হন।

নারীদের মধ্যে ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা, এবং ১৭ থেকে ১৯ বছর বয়সী পুরুষরা অধিক আক্রান্ত হন।

৪০ বছর বয়সের পরেও হতে পারে, যা নির্ভর করে শারিরীক অবস্থা, ঔষধ, পারিপাশ্বিক পরিবেশ ইত্যাদির উপর।

ক্লিনিক্যাল ফিচারস্ (Clinical features) 

লক্ষন (Symptom's) 

  • ধীরে ধীরে রেগের সূত্রপাত হবে।
  • গালে, কপালে, কাঁধে, পিঠে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র, লাল উদ্ভেদ দেখা দেবে।
  • প্রথমে বিচ্ছিন্নভাবে উঠলেও পরে সেগুলো গুচ্ছাকারে দেখা দেবে।
  • উদ্ভেদগুলোতে মৃদ্যু ব্যথা হতে পারে।
  • উদ্ভেদগুলোর উপর সাদা একপ্রকার মামড়ি পড়বে যা পরবর্তী সময়ে কালোবর্ন ধারন করবে।

চিন্থ (Sign's)

  • রোগী সাধারনতঃ অল্পবয়সী।
  • গালে, কপালে, ঘাড়ে লাল গুচ্ছাকার উদ্ভেদ।
  • মুখমন্ডল তৈলাক্ত।

উল্লেখ্য- এ্যক্নে ভাল্গারিস বা ব্রন এর সদৃশ আরও একটি রোগ আছে যার নাম এ্যক্নে রোজেশিয়া (Acne Rosacea)। রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপরে ক্লিক করুন।

ব্যবস্থাপনা (Management)

  • লক্ষনসাদৃশ্যে হোমিওপ্যাথিক ঔধষ প্রয়োগ করতে হবে।
  • ত্বক নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাদ্য পরিহার করতে হবে।
  • ব্রন খোঁটা পরিহার করার পরামর্শ দিতে হবে, তা নাহলে জীবানু সংক্রামন এবং ক্ষতচিন্থ হবার সম্ভাবনা থাকবে।
  • নিয়মিত হালকা ব্যয়ামের পরামর্শ দিতে হবে।
  • প্রতিদিন রাত্রে শুতে যাবার আগে ইষদূষ্ণ পানিতে মুখ ভালোভাবে ধুলে ব্রন দ্রুত আরোগ্য হয়।
  • ডিমের কুসুম মুখে এবং ব্রনের স্থানে মাখিয়ে ১০ মিনিট রাখুন তারপর সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। ডিমের কুসুম “ভিটামিন এ” এর একটি বড় উৎস যা চামড়ার জন্য খুবই উপকারী। একমাস এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে ব্রন হবার প্রবনতা দূর হয় এবং চামড়া উজ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

ব্রন সর্ম্পকে ভ্রান্তধারনা

  • “২/৪ টা ব্রন হওয়া ভালো” কথাটি মোটেও ঠিক নয়।
  • অনেকের ধারনা, ব্রনের জন্য সকালের বাসি থুথু, নাকের পিঁচুটী ইত্যাদি মাখানো ভালো, কিন্তু এটি নোংরামী এবং অবৈজ্ঞানিক একটি তথ্য, এতে সংক্রামনের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
  • কোষ্ঠবদ্ধতার সাথে ব্রণের সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই।
  • “চকোলেট খেলে ব্রন বৃদ্ধি পায়” কথাটির কোন সত্যতা নেই, তবে এগুলো কৃত্রিম খাদ্য এবং অস্বাস্থ্যকর, সে হিসেবে এগুলো পরিহার করাই শ্রেয়।

প্যাথলজীক্যাল ইনভেষ্টিগেশান (Pathological investigations)

Serum androgen.

পরিশেষে

যে কোন সমস্যায় আপনার নিকটস্থ দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিরাপদ ও সাশ্রয়ী।

আপনার এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য ও সার্বিক মঙ্গল কামনায়

ডা. রাতুল মাহমুদ সজল

বি.এইচ.এম.এস.

নওয়াব আলী হোমিও চিকিৎসালয়, বালুবাগান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

প্রাক্তন প্রভাষক, রহনপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।

About Author

One thought on “এ্যক্নে ভাল্গারিস / ব্রন (Acne Vulgaris)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *