সাধারনভাবে, ঘরবাড়ির ধুলোতে, তোষক, কুশোন ও কুশোন কভার, কার্পেট, পুরোনো জামা-কাপড় ইত্যাদিতে মাইট (Mite) নামক একপ্রকার ক্ষুদ্র অনুজীব বসবাস করে, যা সাধারনত: কোন ক্ষতির কারন হয় না, কিস্তু অনেকের ক্ষেত্রে এটি বাতাসের মাধ্যমে নাকে প্রবেশ করে এ্যলার্জিজনিত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে থাকে, যাকে ডাস্ট মাইট এ্যলার্জি (Dust mite allergy ) বলা হয়।
কারা অধিক আক্রান্ত হন (More prone to)
যে কেউ যে কোন বয়সে আক্রান্ত হতে পারেন, তবে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা অধিক আক্রান্ত হন।
নারীরা অধিক আক্রান্ত হন।
যাঁরা ধুলো-ময়লার কাজ বেশী করেন (যেমন ঝাড়দার, গৃহকর্মী, গার্মেন্টস শ্রমিক, তুলো শ্রমিক) তাঁরা অধিক আক্রান্ত হন।
পরবারে কারো ডাস্ট মাইট এ্যলার্জি থাকলে অন্য সদস্যদের হবার ঝুঁকি থাকে।
ক্লিনিক্যাল ফিচারস্ (Clinical features)
লক্ষন (Symptoms)
- হঠাৎ শুরু হবে।
- ধুলো ঝাড়লে বা ধুলো নাকে গেলেই হাঁচি শুরু হবে এবং একসাথে ৮/১০ বার বা তারও অধিক হাঁচি পড়বে।
- হাঁচির সাথে নাক দিয়ে পাতলা জল ঝরবে।
- নাক সুড়সুড় করবে।
- নাক ড়গড়ানোর কারনে নাকের অগ্রভাগ লাল দেখা যেতে পারে।
- চোখ ভেজাভেজা ও ছলছল দেখাবে। চোখ লাল হয়ে যেতে পারে।
- নাকের অবরুদ্ধতা থাকতে পারে।
- কাশি হতে পারে।
- মুখমন্ডলে ভারবোধ এবং ফোলাভাব থাকতে পারে।
- চোখের চারিদিকে কালো দাগ দেখা যেতে পারে।
- দুইবার আক্রমনের মধ্যবর্তী সময়ে রোগী সম্পূর্ন স্বাভাবিক থাকবে।
চিন্থ (Signs)
- আক্রমন অবস্থায় রোগীকে অস্থির দেখাবে।
- আক্রমন অবস্থায় নাকের অগ্রভাগ লাল দেখাবে।
- আক্রমন অবস্থায় চোখ ভেজাভেজা দেখাবে।
জটিলতা (Complications)
ডাস্ট মাইট এ্যলার্জি প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসা শুরু করা উচিত, তা নাহলে পরবর্তী সময়ে এটি হাঁপানী (Asthma)-র মতো তীব্র ও মারাত্মক শ্বাসতন্ত্রের জটিলতা ও সাইনুসাইটিস (Sinusitis) সৃষ্টি করতে পারে।
ব্যবস্থাপনা (Management)
- রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে।
- লক্ষনসাদৃশ্যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রদান করতে হবে।
- ধুলো-ময়লা থেকে দূরে থাকতে হবে।
- মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
- পুরোনো পোশাক বের করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- বাড়িঘড় পরিচ্ছন্ন এবং যথাসম্ভব ধুলোমুক্ত ও আলোবাতাসপূর্ন রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্যাথলজীক্যাল ইনভেষ্টিগেশান (Pathological investigations)
- CBC.
- Serum IgE.
- Total circulating eosinophil count.
'জেনে রাখা ভাল'
Serum IgE একটি অন্যতম এ্যালার্জী পরীক্ষা। এই রক্ত পরীক্ষাটির মাধ্যমে জানা যায় যে, ব্যক্তির শরীরে এ্যালার্জী স্বাভাবিক অথবা অস্বাভাবিক মাত্রায় আছে কিনা। Serum IgE এর স্বাভাবিক মান । তবে এই পরীক্ষাটি করানোর ৭২ ঘন্টা পূর্বে থেকে এ্যালার্জী বৃদ্ধি পায় এ ধরনের খাদ্য এবং এ্যালার্জী কমে এ ধরনের ঔষধ পরিহার করা উচিত।
বিভিন্ন প্রকার এ্যালার্জি নিয়ে অন্যান্য ব্লগে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকগুলোতে ক্লিক করুনঃ
আপনার সুস্বাস্থ্য ও সার্বিক মঙ্গল কামনায়
বি.এইচ.এম.এস.
নওয়াব আলী হোমিও চিকিৎসালয়, বালুবাগান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
প্রাক্তন প্রভাষক, রহনপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
3 thoughts on “এ্যলার্জি (Allergy), ডাস্ট মাইট (Dust mite)”